News:

আনোয়ারা বেগম মুসলিম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯৩২ সালে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হয়। সুফিয়া খাতুন (ওস্তাদ আম্মা নামে পরিচিত) নামের একজন মহিয়শী নারী মাত্র দশজন ছাত্রী নিয়ে এর যাত্রা শুরু করেন। তখন এই প্রতিষ্ঠানটির নাম ছিল মুসলিম গার্লস স্কুল। এই মুসলিম স্কুলে সম্ভ্রান্ত এবং রক্ষণশীল পরিবারের মেয়েরা অধ্যয়ন করত। অনেক ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মহিলা এই স্কুল থেকে পড়াশুনা করে বহু উচ্চ পদে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন এবং আছেন। যেমন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন এই স্কুল থেকেই অধ্যয়ন করে গেছেন। ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সাবেক মাননীয় চেয়ারম্যান মিসেস ফাহিমা খাতুন এই স্কুল থেকে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ন হয়েছেন। মিসেস আয়শা আক্তার উনিও এই স্কুল থেকে উত্তীর্ন হয়ে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত অধ্যক্ষ পদে ইডেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে কর্মরত ছিলেন এবং পরবর্তীতে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ডি.জি হিসেবে কর্তব্য পালন করেছেন। আরও অনেক নাম না জানা ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মহিলারা এই স্কুল থেকে উত্তীর্ন হয়ে দেশ-বিদেশে অবস্থান করছেন। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য তাদের নামে বৃত্তি প্রদান করেছেন। অনেক টি.ভি ব্যক্তিত্ব যেমন, ফেরদৌসী মজুমদার, নিমা রহমান এছাড়া মিসেস শেখ সুলতানা কামাল এই স্কুলেরই খ্যাতনামা ব্যক্তিত্ব এবং এই প্রতিষ্ঠানেরই ছাত্রী ছিলেন। এই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এ.ইউ.এম খলিলউল্লাহ প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করেন তাঁর সহধর্মিনী মরহুমা আনোয়ারা বেগমের নামে। সেই সূত্রে এই স্কুলের নামকরণ করা হয় আনোয়ারা বেগম মুসলিম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। কারণ তিনি এই প্রতিষ্ঠানটির জমির দলিল স্কুলের নামে দান করেন। তখন থেকেই এই নামকরণ করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৯০ সনে পুরাতন ঢাকার রক্ষনশীল পরিবারের মেয়েদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার লক্ষ্যে খলিলউল্লাহ সাহেব স্কুলটিকে মহাবিদ্যালয়ে উন্নীত করেন এবং তখন এই প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয় আনোয়ারা বেগম মুসলিম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ। এখানে এই মহাবিদ্যালয়ে বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও কলা বিভাগ-তিনটি বিভাগ চালু আছে। প্রত্যেক বছর সাফল্যের সাথে শিক্ষার্থীরা উত্তীর্ণ হয়ে বিভিন্ন উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান- বুয়েট, মেডিকেল ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আছে। PEC, JSC, SSC I HSC সাফল্য সন্তোষজনক। এখানে ৫৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা কর্মরত আছেন। অফিস সহকারী ৫ জন ও ১৪ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আছেন। প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয় গভর্নিং বডির মাধ্যমে। স্কুল ও কলেজ শাখার ছাত্রীদের জন্য একটি আবাসিক হোস্টেল আছে। একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরী, অত্যাধুনিক কম্পিউটার ল্যাব ও একটি বিজ্ঞান গবেষণাগার আছে। একটি কারিগরী প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে মেয়েদের চিত্রাঙ্কন ও সেলাই প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা আছে। বিনোদনের জন্য ছাত্রীদের কমনরুম, গার্লস গাইড, স্কাউটস আছে। খেলাধুলার জন্য সুপরিসর মাঠ, যেখানে প্রতিবছর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হয়। সহ-পাঠ ক্রমিক কার্যক্রমের মধ্যে নাচ, গান, বিতর্কের ব্যবস্থা আছে। প্রতি বছর এই প্রতিষ্ঠান থেকে ছাত্রীরা বিজ্ঞান মেলাসহ বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন জাতীয় পুরস্কার আনতে সক্ষম হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি, শিক্ষক-শিক্ষিকা মন্ডলী, অফিস সহকারী ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই প্রতিষ্ঠানটিকে একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার লক্ষ্যে আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এজন্য আমরা আপনাদের সহ দেশবাসীর কাছে সকল প্রকার সহযোগিতা কামনা করছি।